Blog Archive

Thursday, June 25, 2009

একটা মজার ঘটনা

ছোটবেলার একটা মজার ঘটনা মনে পড়ে গেল।
তখন আমরা খুব ছোট। আমি বোধহয় ক্লাস টুতে আর আমার পিঠোপিঠি ভাই আর খুড়তুতো বোন-নার্সারী আর ওয়ানে পড়ে। আমাদের ছাদে ঠাকুর ঘর ছিল। সেখানে সব পূজো হত। বড়রা করত। একবার কোন ভাবে একটা পুরানো কাঠের সিংহাসন বাতিল করা হয়। সেটা আমরা দখল করি এবং নিচে নামিয়ে আনি। সেখানে আমাদের মনের মত একটা ক্যালেন্ডারের কৃষ্ণ ঠাকুরের ছবি কেটে পিজবোর্ডে লাগিয়ে, তিন জনে কৃষ্ণ ঠাকুরকে সিংহাসনে প্রতিষ্ঠা করি। ঠাকুর ঘরে যেমন ভাবে ঠাকুরকে প্রসাদ দেওয়া হত, আমরাও তার ব্যবস্থা করি। কিন্তু ঠাকুর ঘর থেকে নকুলদানা বা বাতাসা আনা সম্ভব নয়, অনেক উঁচু তাকে রাখা থাকে। তাই আমরা নিজেদের ভাগ থেকেই কৃষ্ণ ঠাকুরকে ক্যাডবেরি, জেমস্‌, লজেন্স- এসব দিতে থাকি।
এরপরেই চ মৎকার শুরু হয়। ছোট থেকেই দেখে আসছি ঠাকুর ঘরে ঠাকুর প্রসাদ খান না। পিঁপড়ে ধরে, পরে আমরা প্রসাদ পাই। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার! আমাদের কৃষ্ণ ঠাকুর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের ক্যাডবেরি, জেমস্‌, লজেন্স- এসব প্রসাদ খাচ্ছেন! আমরা আনন্দে আটখানা হয়ে ব্যাপারটা জনে জনে বলতে থাকি। এবং ঠাকুর যে বড়দের দেওয়া প্রসাদ না খেয়ে আমাদের দেওয়া প্রসাদ খাচ্ছেন – এই ভেবে প্রচন্ড গর্ব বোধ করতে থাকি। আমরা ছেলেমানুষ বলে হয়ত বড়রা অতটা গা করেনি। কিন্তু আমাদের চেয়ে কিছু বড় আত্মীয় এক-দিদি একথা শুনে খুবই কৌতুহলী হয় এবং আমাদের নিয়েই কৃষ্ণ ঠাকুর কি করে প্রসাদ খান তা দেখতে সেখানে ঘাপ্‌টি মেরে বসে থাকে। শেষে দেখা যায় একটি ছোট্ট নেংটি ইদুঁর কিছু পরে নাচতে নাচতে এসে কুট্‌ কুট্‌ করে আমাদের দেওয়া প্রসাদ খাচ্ছে। ঘটনাটা দেখার পর আমাদের মুখ শুকিয়ে আম্‌সি হয়ে যায়। তবুও হার মানা যায় না! তাই আমরা মনে মনে কিছুটা মর্মাহত হলেও এর এই ব্যাখ্যা করি যে কৃষ্ণ ঠাকুর সব যানতে পেরে গেছিলেন, তাই ইদুঁরের রূপ নিয়ে আসেন। এই ব্যাখ্যা দিয়েই আমরা সেখান থেকে গম্ভীর মুখে প্রস্থান করি। -যদিও এটাও ঠিক যে সেই ইদুঁরের ভিতরও ঈশ্বর ছিলেন। তিনিই আমাদের প্রসাদ খেয়ে এত আনন্দ সে সময় দিয়েছিলেন।

Run To You - Live at Slane Castle, Ireland.mp3

Followers