Blog Archive

Sunday, January 10, 2016

কথাচ্ছলে মহাভারত - ১১৯

[পূর্বকথা কৃষ্ণ ও অর্জুন সপরিবারে যমুনার তীরে বেড়াতে গেলেন....ব্রাহ্মণবেশী অগ্নিদেব এসে তাদের খান্ডব বন দহনের অনুরোধ করলেন...কৃষ্ণ ও অর্জুন অগ্নিকে সর্ব প্রকার সাহায্যের আশ্বাস দেন.....] 



ইন্দ্রাদি দেবতার সহিত অর্জ্জুনের যুদ্ধ ও ময়দানবাদির পরিত্রাণঃ 

অতি ক্রোধে পুরন্দর ইন্দ্র তাঁর ঐরাবতের উপর চড়ে বসলেন। হাতে তাঁর বজ্র। মাথায় ছাতা শোভা পায়। রাগে তাঁর সহস্রলোচন রক্তবর্ণের হল। 

সবাইকে তিনি আজ্ঞা দেন –সকল দেবগণ এখনই নিজেদের প্রহরণ(অস্ত্র) নিয়ে আমার সাথে আসুন। কাদের এত সাহস আমার খান্ডব অরণ্য পোড়ায়, দেখি! আজ যে এই হোম করছে-তাকে ও তাঁর সহায় জনদের বিনাশ করব। 
এই বলে বজ্রপাণি ইন্দ্র তাঁর পরিবার উচ্চৈশ্রবা, ঐরাবত, চার মেঘ ও চৌষট্টি মেঘিনী নিয়ে চললেন। 

যক্ষ-যিনি ধনের দেবতা, তিনি তাঁর ভয়ঙ্কর গদা নিয়ে ইন্দ্রকে অনুসরণ করলেন। 
মৃত্যুর দেবতা –যম, তাঁর মহিষের পিঠে দন্ডহাতে সহচরদের নিয়ে চললেন। 
নিজ নিজ যানে করে সব গ্রহ, অষ্ট বসু, অশ্বিনীকুমাররা চললেন। 
পবন(বায়ু)দেব ধনুক হাতে মৃগে(হরিণ) আরোহণ করে ইন্দ্রের সাথে এগিয়ে গেলেন। 
মকরধ্বজ কন্দর্প, জলের দেবতা বরুণ বাম করে পাশ(জাল বিশেষ) অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে চললেন। 
শিখীর(ময়ূর) পিঠে চড়ে শক্তিধর ষড়ানন কার্তিক চললেন খান্ডব বন রক্ষা করতে। 
এইভাবে তেত্রিশ কোটি দেবতা খান্ডব অরণ্য রক্ষা করতে চললেন। 

গরুড়পাখি সঙ্গে লক্ষ লক্ষ পক্ষী নিয়ে নিজের জ্ঞাতিদের রক্ষার জন্য এলেন। 
অনন্ত নাগও তাঁর সাথিদের নিয়ে চললেন। তক্ষক তাঁর শত ফণার সেনা নিয়ে চলল। তাদের বিষ বৃষ্টিতে পৃথিবী পূর্ণ হল। 
এভাবে যক্ষ, রক্ষ, ভূত, দানব সবাই নিজেদের সেনা নিয়ে নানা অস্ত্রে সেজে চলল। এভাবে সকলে আকাশ জুড়ে আবির্ভূত হল। 

তখন দেব পুরন্দর ইন্দ্র জলধরকে আজ্ঞা দিলেন –বৃষ্টি করে এই অনল(আগুন) নেভান। 

আজ্ঞা মাত্র অতিবেগে বরুণদেব মেঘ ফাটিয়ে মুষলধারে জল ঢালতে লাগলেন। সে যেন প্রলয়কালের বৃষ্টি শুরু হল, মনে হল সৃষ্টি যেন তাতেই ডুবে যাবে। আকাশও যেন জলে ডুববে। এত বজ্রপাত ও মেঘ ডাকল যে তিনলোক ভয় পেতে লাগল। 

সব দেখে পার্থ মহাবল বৃষ্টি যাতে বনের উপর না পরে তার জন্য শোষক বায়ু-অস্ত্র ছাড়লেন। বেগে সেই অস্ত্র শূণ্যে উঠে সব জল শোষণ করল ও বায়ু সকল মেঘ উড়াল। 
মেঘের পরাজয় দেখে সকল দেবতা ক্রোধিত হলেন। শ্রীকৃষ্ণ ও অর্জুনের উপর বজ্র হানলেন দেবরাজ ইন্দ্র। 
কিন্তু বজ্র রণস্থানে নর-নারায়ণকে চিনতে পেরে তাকে আঘাত না করে পুনরায় ইন্দ্রের হাতে চলে এলেন। 

অস্ত্র ব্যর্থ হচ্ছে দেখে দেবরাজ যেমন লজ্জা পেলেন তেমনি আরো ক্রোধি হয়ে মন্দর পর্বত উপড়ে আনলেন। 
মন্দর গিরিবর হুহুঙ্কার ছাড়তে ছাড়তে আসতে লাগলেন, শব্দ শুনে মনে হল যেন স্বর্গ ছিঁড়ে পরল। 

ইন্দ্রপুত্র অর্জুন-যিনি ভরদ্বাজপুত্র দ্রোণের শিষ্য, তিনি তাঁর দিব্য শিক্ষার বলে অজেয় গান্ডীব ধনুক দিয়ে শীঘ্র বাণ ছেরে মন্দর পর্বত খান্‌ খান্‌ করেন। পর্বত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রেণুর মত চূর্ণ হয়ে ছড়িয়ে পরল। 

পর্বত চূর্ণ হতে দেখে জম্ভভেদী(ইন্দ্র - জম্ভা অসুরের হত্যাকারী) চমকে উঠলেন। তিনি ক্রোধে নানা অস্ত্র বর্ষণ শুরু করলেন। 
এভাবে দেবতারা হুতাশন অগ্নিকে নেভানোর জন্য অনেক চেষ্টা করতে লাগলেন। 
বায়ু, অগ্নি, ভিন্দিপাল(প্রাচীন ক্ষেপণাস্ত্র বিশেষ), ইন্দ্রজাল, ব্রহ্মজাল, পরশু মুদ্গর, শেল, শূল, চক্রবাণ, জাঠাজাঠি(লৌহযষ্টি), অর্ধচন্দ্র, তোমর(যুদ্ধাস্ত্র), ত্রিশূল, তবল(কুড়ুল), শাবল, সাঙ্গি, ক্ষুরপা, টাঙ্গি, বেণব, কুঠার, পট্টিশ, ভল্ল, শেল, শব্দভেদী, কুন্ড, খড়্গ, রিপুচ্ছেদী, সূচীমুখ খট্বাঙ্গ(মুগুর বিশেষ) প্রভৃতি কোটি কোটি অস্ত্র নিক্ষেপ করা হল। 
বৃষ্টির মত এত সব অস্ত্র ইন্দ্র নিক্ষেপ করতে থাকেন, অন্য দিকে ধনঞ্জয় সব নিবারণ করতে থাকেন। 
আগুনে পতঙ্গ পরে যেমন মুহূর্তে ভস্ম হয় সেভাবেই পার্থ সব নষ্ট করতে থাকেন। এভাবে অগ্নিকে রক্ষা করেন নর-নারায়ণ। পার্থ মহারণে নিযুক্ত থাকেন। একাই তিনি সবার সাথে লড়তে থাকেন। 

অর্জুন সুরাসুর কারো বিপক্ষেই ভয় পাচ্ছেন না দেখে দেবরাজ বিস্মিত হলেন পার্থের বীরত্ব দেখে। দেবতাদের দুরাবস্থা দেখে মহাবীর গরুড় ক্রোধে গর্জন করতে করতে তেড়ে এলেন। বজ্রের মত দাঁত ও নখ নিয়ে মুখ বিস্তার করে পার্থকে তিনি গিলতে গেলেন। আকাশে গরুড়পাখিকে তেড়ে আসতে দেখে পার্থ ব্রহ্মশির নামে দিব্য অস্ত্র তুলে নিলেন। এটি তিনি পূর্বে গুরুর কাছ থেকে পান। এই ব্রহ্মশির অস্ত্রে চারদিক অগ্নিময় হল। গরুড় ব্যস্ত হয়ে উঠলেন। তিনি তার পক্ষীকুলকে নিয়ে যুদ্ধে ভঙ্গ দিয়ে পালালেন। 

তখন নাগরা ক্রোধে পার্থকে আক্রমণ করল। তারা সহস্র ফণা বিস্তার করে, নিশ্বাসে সমীরণ(বায়ু) বহিয়ে এগিয়ে আসল। তাদের গর্জনে সকলের কানে তালা লেগে গেল। তারা দশশত বক্রমুখ দিয়ে অবিরত বিষ ছড়াতে লাগল, যেন কর্কটের মেঘমালা। ফাল্গুনি-অর্জুন ফণী দেখে তার গান্ডীব ধনুকে টান দিলেন। তিনি পিপীলিকা(পিপঁড়ে) বাণ মারলেন। নানাবর্ণের নানারূপের পিপড়ে/পিপীলিকারা গিয়ে ভুজঙ্গ/সাপদের ঘিরে ধরে। পার্থ এবার শিখী নামের দিব্য শর মারেন। লক্ষ লক্ষ ময়ূর এসে উড়ে উড়ে নাগদের খন্ড খন্ড করতে থাকে। চারদিকে রক্তমাংসের বৃষ্টি হতে থাকে। এত অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ফণিরাও রণে ভঙ্গ দিয়ে পালায়। 

এবার এগিয়ে আসে যক্ষের দল। কোটি কোটি যক্ষ ভয়ঙ্কর গদা হাতে, ধনুঃশর টঙ্কার দিয়ে যুদ্ধ করতে এল। তারা ভয়ঙ্কর সিংহনাদ ছেড়ে নানাবর্ণের অস্ত্র বর্ষণ করে মুহূর্তে চারদিক অন্ধকার করে ফেলল। সূর্যের মুখ ঢেকে গেল। মনে হল অমাবস্যার রাত নেমেছে। শরজালে সংসার ঢেকে গেল। 
কিন্তু পার্থও কম যান না। তিনিও প্রতি অস্ত্রের বিপক্ষে আর এক অস্ত্র হেনে দৃষ্টি মাত্র সব সংহার করেন। অস্ত্র ব্যর্থ হচ্ছে দেখে যক্ষরা কুপিত হল। রাগে ঠোঁট কামড়ে গদা হাতে ধনেশ্বর যক্ষরা তেড়ে আসে। 
পার্থ এবার এমন বজ্রশর হানলেন যা যক্ষদের বুকে আঘাত করল। সকলের হাত থেকে গদা খসে পরল। যক্ষরা চিন্তিত হয়ে রণে ভঙ্গ দিয়ে পালাল। যক্ষরাজ এভাবে পরাজিত হয়ে লজ্জা পেয়ে সপরিবারে যুদ্ধস্থান ত্যাগ করলেন। 

এরপর ধনঞ্জয় দেবতাদের সাথে যুদ্ধ করতে লাগলেন। ক্রমে অরুণ, বরুণ, যমের সাথে যুদ্ধ হল। সব দেবতাদের একই রকম দুর্গতি হল। সত্য, আদি চার যুগে এমন যুদ্ধ কখনও হয়নি, হবেওনা এমন অনুপম সুর(দেবতা) ও নরের যুদ্ধ। দেবতারা বহু পরিশ্রম করেও যখন এই যুদ্ধে কিছুই করতে পারলেন না।

হুতাগ্নির ভুক্‌/খিদে নির্বাণ হচ্ছে না, এদিকে বহু জ্ঞাতির বধ দেখে ক্রোধে রাক্ষস, দানব, প্রেত, ভূত, অপ্সরী, কিন্নরী, বিদ্যাধর মহারোল কোলাহল করতে করতে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে ধেয়ে আসতে লাগল। 
পিশাচ সৈন্যদল ভয়ঙ্কর, তাদের মুখ থেকে উল্কার মত অগ্নি ঝরে। সকলে বিভিন্ন আয়ুধ(অস্ত্র), ভয়ঙ্কর গদা নিয়ে, কেউ বা পর্বত, বড় বড় পাষাণ নিয়ে তেড়ে আসে। লাখ লাখ বৃক্ষ নিয়ে তারা মার মার রব তোলে। কেউ বা বয়ান/মুখ বিস্তার করে ধেয়ে আসে। 

দানব সৈন্যদের ধেয়ে আসতে দেখে মুরারি কৃষ্ণ পাঞ্চজন্য বাজিয়ে সুদর্শন চক্র হাতে তুলে নেন। চোখের নিমেষে দানবদের তিনি মারলেন। 
ধনঞ্জয় পার্থও বাণ মেরে রাক্ষস-পিশাচদের মেরে অগ্নিকে তর্পণ করলেন। 
এই সাংঘাতিক যুদ্ধ দেখে বাকিরা ভয়ে যুদ্ধে ভঙ্গ দিয়ে পালাল। 
এভাবে বারবার সুরাসুর-নাগদের সাথে অবিরাম যুদ্ধ চলল। 

এই খান্ডব বনের মাঝে পন্নগ(সাপ)রাজ তক্ষক বাস করতেন। তিনি ইন্দ্রের সখা ছিলেন। সে সময় তক্ষকরাজ কুরুক্ষেত্রে গেছিলেন। কিন্তু গৃহে ভার্যা, পুত্র, আত্মীয়স্বজন ছিল। হঠাৎ বনে আগুন লাগায় ফণিপ্রিয়া প্রমাদ গণলেন। পুত্রকে কোলে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে বুঝলেন আজ আর রক্ষা নেই। 
তখন পুত্র অশ্বসেনকে কেঁদে তিনি বলেন –পুত্র, কোন উপায় দেখছি না। আমার কথা শোন, পুত্র! আমার উদরে প্রবেশ কর। আমাকে হত্যা করলেও তুমি বেঁচে যাবে। মায়ের কথা মত অশ্বসেন মার উদরে প্রবেশ করল। তক্ষক গৃহিণী বায়ুতে উড়ে পালানোর চেষ্টা করলেন। অন্তরীক্ষে উড়ে কেউ পালাচ্ছে দেখে পার্থ-ফাল্গুনি এক অস্ত্রে তার মুন্ড কাটলেন, পুচ্ছ তিন খন্ডে ছেদ করলেন। নাগিণী মাটিতে লুটিয়ে পরলেন। অশ্বসেন সেই সুযোগে উড়ে পালাল, পার্থ দেখতে পেলেন না। ইন্দ্র বন্ধুর পরিবারের বিপদ বুঝে মায়াজাল বিস্তার করে বন্ধুর সন্তানকে রক্ষা করলেন। 
তা দেখে পার্থ মহাক্রুদ্ধ হয়ে ইন্দ্রের সাথে আবার যুদ্ধ শুরু করলেন। শরজালে মেদিনী(পৃথিবী) ছাইল। ইন্দ্রার্জুনের এই মহারণে ত্রিভুবন চমকিত হল। 

হঠাৎ সে সময় আকাশ থেকে শূন্যবাণী হল –আপনারা এ যুদ্ধ বন্ধ করুন। হে দেবরাজ নিজেকে সম্বরণ করুন। সমগ্র ব্রহ্মান্ডে এই নর-নারায়ণকে যুদ্ধে কেউ পরাজিত করতে পারবে না। হে শতক্রতু(ইন্দ্র) কেন এই যুদ্ধ করছেন! এতে পরিশ্রান্তও হবেন, অপমানিতও হতে হবে। আপনার সখা কশ্যপকুমার তক্ষকরাজ এখানে নেই, তিনি কুরুক্ষেত্রে নিরাপদে আছেন। 

আকাশবাণী শুনে ইন্দ্র ও অন্য দেবতারা যুদ্ধে বিরত হলেন। সুরপতি ইন্দ্র স্বর্গে ফিরে গেলেন। 
নাগরা ভোগবতীতে (পাতালস্থ গঙ্গা) স্থান পেল। বাকিরা যে যার স্থানে ফিরে গেল। 
নিষ্কন্টক হয়ে হুতাশন অগ্নি আনন্দে খান্ডব বন দহন করেন। 
নানাবর্ণের পশুরা পুড়তে থাকে। ভক্ষ্য-ভক্ষক এক সাথে অবস্থান করে, কেউ কাউকে আক্রমণ করে না, সকলে প্রাণভয়ে ডাক ছারতে থাকে। কুঞ্জর(হাতি) কেশরী(সিংহ) কোলে, মৃগ(হরিণ)-ব্যাঘ্র(বাঘ) এক স্থলে, মূষিক(ইঁদুর)- মার্জার(বিড়াল) সাথে বসে মৃত্যুর অপেক্ষা করে। একত্র মণ্ডূক(ব্যাঙ), নাগ, শার্দূল(বাঘ)-মহিষ বসে বৃষ্টির অপেক্ষা করতে থাকে। আগুনের তাপ যেন লাফিয়ে লাফিয়ে বড় বড় বৃক্ষকেও ভক্ষণ করতে থাকে। ভাল্লুক, নকুল(বেজি/নেউল), শিবার(শিয়াল) মত ছোট প্রাণীরা গর্তে প্রবেশ করে প্রাণে বাঁচতে চায়। অনেকে জলে ঝাঁপিয়ে প্রাণে বাঁচতে চায়। পাখিরা আকাশে উড়ে পালায়। কিন্তু কোথাও কেউ ত্রাণ পায় না। হুতাশন সবার প্রাণ নেন। কৃষ্ণার্জুনও তাকে সাহায্য করেন। 

এদিকে ময় নামে এক দানব যে কিনা নমুচি দানবের ভাই – তক্ষকধামে লুকিয়ে ছিল। অগ্নিকে পিছনে দেখে ভয়ে সে পালাতে পালাতে দেব দামোদর-কৃষ্ণের সামনে এসে পরে। দানব দেখে হরি দেবতাদের অরি(শত্রু) বুঝে সুদর্শন চক্র ছাড়লেন। 

পিছনে সুদর্শন ও অগ্নিকে নিয়ে ময়দানব প্রাণভয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে অর্জুনের কাছে যায়। কাতর কন্ঠে প্রার্থনা করে বলে – রক্ষা করুন হে কুন্তীপুত্র, ধনঞ্জয়! আপনি ত্রৈলোক্য বিজয়ী বীর! আমি ক্ষুদ্র প্রাণী! আমার পিছনে সুদর্শনচক্র ও যমদূত অগ্নি। আমি তো ক্ষুদ্র মীন(মাছ) এই নক্র(কুমীর)-দের সামনে! আমায় আপনি রক্ষা করুন। 

পিছন থেকে এই কাতরধ্বনি শুনে অর্জুন বলে ওঠেন – কে ভয়ে আমার স্মরণ নিলে! তোমার কোন ভয় নেই। 

অর্জুনের অভয়বাণী শুনে কৃষ্ণ সুদর্শনচক্র ফিরিয়ে নিলেন। হুতাশন অগ্নিও ময়দানবকে ছেরে দিলেন। এভাবে ময়দানব রক্ষা পেয়ে গেল। 

কিন্তু খান্ডববন সর্বভক্ষা অগ্নির উদরে গেল। মনের ইচ্ছে পূর্ণ হতে অগ্নির রোগও সেরে গেল। কৃষ্ণার্জুনের সাহায্যে তার সঙ্কল্প সম্পূর্ণ হল। বিস্তৃত খান্ডববন নানাবর্ণের বৃক্ষ ও নানাজাতের ঔষধি বৃক্ষে পূর্ণ ছিল। এভাবে সব পশু, পাখি, নাগ, রাক্ষস, দানব, রক্ষ আদি সকলকে নিয়ে খান্ডববাসী ভস্মরাশিতে পরিণত হল। কেবল ছয়টি প্রাণী বেঁচে গেল। 

এই আদিপর্ব বেদব্যাস রচনা করে গেছেন, পাঁচালী প্রবন্ধে গীত আকারে কাশীদাস দেব রচনা করলেন। 
......................................

Run To You - Live at Slane Castle, Ireland.mp3

Followers