Blog Archive

Wednesday, December 2, 2009

*** তিলোত্তমা কলকাতা ***

কলকাতা...কলকাতা......আমার কলকাতা....কল্লোলিনী কলিকাতা.....বড়ই সুন্দরী!......এখানে হারিয়েছি বেশ......পেয়েছি তার থেকেও হয়ত অনেক.........ক...ল...কা...তা......ভাবতে ভাবতেই যে যে ছবি মাথায় আসছে......


হাওড়া ব্রিজ


মাদার টেরিসা


সত্যজিৎ রায়


অপুর সংসার... :)


ভিক্টোরিয়া


২য় হুগলি ব্রিজ


শহিদ মিনার


বেলুর মঠ


মা দূর্গার এই রূপ আমার বেশি ভাল লাগে


নন্দন


মিলেনিয়ান সিটি


গোলপার্ক ও রামকৃষ্ণ মিশন


বটানিকেল গার্ডেন


গঙ্গার ঘাট


সাউথ সিটি, গলফগ্রিন


সাউথ সিটি, মল


গড়িয়াহাট


কাক্‌কা




চড়ই চড়ই চড়ইটি




ভিক্টোরিয়ার সামনে ঘোড়ার গাড়ি


ফুচ্‌কা!!! :P


রস-গুল্লা!


জিলিপি


কচুড়ি


ইলিশ!!!


কলেজস্ট্রিট


কত্তো পটের ছবি!


এছাড়া নিচের লিঙ্কটাও দেখলে ভাল লাগবে...... :)
http://picasaweb.google.com/dipanwita2000/Album#

আমার বন্ধুরা ...(পর্ব-২)

এবার সদর গার্লস স্কুলের বন্ধুদের কথা বলবো।
ইলেভেনে সদর গার্লস স্কুলে ভর্তি হলাম। এখন থেকে আমি একেবারে যাকে বলে লায়েক হয়ে উঠলাম। পাপা কোনদিনও পড়াশুনা নিয়ে কিছু বলতো না। পাশ করি এই অনেক! সুমিতদার শাসনও নেই! এখন টাউনেও যাচ্ছি! বেশ আছি। আগের স্কুলের প্রচুর মেয়ে এই স্কুলে এলো, নতুন অনেক বন্ধুও হল। এবার তাদের কথা বলি।

প্রথমে মনে পড়ছে মল্লিকার কথা। ও সেন্ট্রালেও আমাদের ক্লাসে ছিল। কিন্তু লাস্টের দিকে বসত। বেশ চুপচাপ ছিল। ওকে মনে রাখার কারণ, ও কোনদিন স্কুল কামাই করত না। প্রতি বছর এটেন্ডেন্সের জন্য প্রাইজ পেত। কিন্তু সেন্ট্রালে ওর শাড়িটা কেমন ছিল, আর একটু ভিতু ভিতু থাকত। কিন্তু রেজাল্ট ভাল করে এই স্কুলে আমারা যারা এক স্কুল থেকে এলাম কাছাকাছি বসতে, ওর সাথে পরিচয় হল ভাল ভাবে। তখন যানলাম ও ছোট্ট থেকে একা ট্রেনে করে সেই রাণীনগর থেকে টাউনে আসছে। তাও কক্ষণ এবসেন্ট হয়না দেখে অবাক হয়েছিলাম।

বাড়িতে আমায় কেউ শাসন করত না। ছোট থেকেই খুব স্বাধীন ভাবে নিজের মত থাকতাম। তবে আমার জগৎ বরাবরই নিজের মনের মত। এবার এই স্কুলে এসে একটু ডানা গজালো। আমাদের ১৬জনের একটা গ্রুপ হল। প্রায় প্রতি রবিরার আমরা চ্যারিটি সিনেমা দেখতে যেতাম। হলে পুর একটা রো নিয়ে আমরা বসতাম। খুব হইহুল্লোর হত। মল্লিকা স্কুলে আমাদের দলে থাকলেও কোনদিন রবিবারের এই গ্যাঙটায় ছিল না।

আরেকজন বল্ধু হল ‘লম্বু’। ৫’১০’’! তাই ওই নামে টিপিকাল হয়েগেল। লম্বুর সাথেও খুব ঘুরতাম। আমাদের অদ্ভুত দেখতে লাগল! লম্বুর বাড়িও যেতাম। আবাক লাগত ওর দুই মাকে দেখে। ওর বাবা বেশ বয়স্ক ছিলেন। বড়মাও বাবার সমবয়সি। লম্বুর মা ওনাদের চেয়ে বেশ ছোট। উনি চাকরী করতেন। লম্বুর কাছে শুনেছি বড়মাই সন্তান হচ্ছেনা দেখে স্বামীর আবার বিবাহ দেন। উনিই বাড়ি দেখেন। লম্বুর দাদাকে উনি চোখে হারান।

লম্বুর দিদির আবার বিয়ে হয় মল্লিকাদের পাড়ায়। আমি আর লম্বু প্রায়ই মল্লিকার বাড়ি বেড়াতে যেতাম। লম্বুর বাড়ি অনেক রেস্ট্রিকশন! কোথায় যাচ্ছ, কেন যাচ্ছ, কখন ফিরবে-সব বলে যেতে হত। এটা আমার সব বন্ধুদের কম-বেশি করতেই হত। আমি অবাক হতাম। আর বন্ধুরা আমায় হিংসে করত। পাপা বাপ্পাকে খুব বকতো। কিন্তু আমাকে কখনও কিছুই বলত না। আমিই বলে যেতাম। বেশি ভাগক্ষেত্রে পাপাই লুনায় করে বন্ধুদের বাড়ি দিয়ে আসত। পাপার কাছ থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা পেয়েছিলাম।

এই লম্বুর কিন্তু আমাদের মধ্যে সবার আগে বিয়ে হয়ে গেল। ও খুব টেনসন করত, গড়পরতা বাঙালী ছেলেরা বেঁটে হয়। ওরচেয়ে লম্বা ওর দাদা ছাড়া আর একজনকেই দেখেছিল। মল্লিকাদের পাড়ায়। আমি, মল্লিকা আর লম্বু এক হলে লম্বুর বহু টেনসনের কথা বলত। মল্লিকা তখন সবে নার্সিং ট্রেনিংএ গেছে, মালদায়। আসলেই আমাদের জমায়েত হত। মল্লিকা পুর ওয়েস্ট বেংগলে নার্সিংএ রেঙ্কও করে! মল্লিকা লম্বুর টেনসন দুর করার উপায় বাতলাতো।

আর ছিল হিরা। নাম একবারে সার্থক! ওর বাড়ি কদমতলা ছারিয়ে। ওদের বাড়ি আমাকে খুব ভোরে পাপা ছেরে আসত। আমরা একজনের কাছে পড়তে যেতাম। হিরা দেখতে ভিষণ মায়াবী ছিল। আমার চেয়েও হাইটে ছোট। কিন্তু একদম প্রোপর্সনেট। প্রচন্ড শান্ত। ক্লাসে আমরা হইহুল্লোড় করলে ও চুপ করে বসেবসে মিষ্টি হাসত। ওর বোনটাও সুন্দরী ছিল। আমাদের স্কুলেই ভর্তি হল।

বাড়ির সামনে কাকুর দোকান। ওদের গোপাল ছিল। কোথাও গেলে সঙ্গে করে গোপালকে নিয়ে যেতেন। কাকিমা ভোরে উঠে গোপালকে তুলতেন। খেতে দিতেন। তারপর আমরা প্রসাদ পেতাম। তারওপর কাকিমা নিয়ম করে আমাদের হরলিক্স খাওয়াতেন। আমার ভাল লাগতনা। হিরা মিটিমিটি হাসত।

মল্লিকার সাথে এক ম্যাডামের কাছে জিওগ্রাফি পড়তে যেতাম। ওনার এটো-কাটার খুব বিচার ছিল না। সেটা দেখে খুব খুশি হই। মল্লিকাটা ইলেভেনে উঠে খুব সিরিয়াস হয়। আর আমি আগের মতই স্টেজে মারব ভাবতাম। ম্যাডাম বকতেন না। পড়াতে পড়েতেই খেতেন। বার বার উঠে যেতেন। ওনার বিশাল লাইব্রেরি ছিল। সেখান থেকে আমি বই বাড়ি নিয়ে আসতাম। ওনার কাছে কেবল ওই লাইব্রেরির জন্যই যেতাম। যদিও সেসব অধিকাংশই ওনার মেয়ের ছেলেবেলার স্টুডেন্ট লাইফের ছবিওলা সুন্দর সুন্দর বই। আমি সেগুলো পড়তাম। দেখে দেখে ছবিও আঁকতাম।

মোহিতনগরের সুজাতার সাথেও আমার বন্ধুত্ব হয়। তবে ও অনেক বেশি মেয়েলি আলোচনায় থাকত। কি জামা এখন ফ্যাসন, কি ভাবে হাসা উচিত-এসব। আমার সাথে বিশেষ পটত না। তবে জলপাইগুড়িতে মেয়েরা একটু দল করে যেহেতু ঘুরতাম আর সুজাতার সবচেয়ে কাছে আমি থাকতাম তাই আমাদের বন্ধুত্ব পাকা হয়। আমার জামা-কাপড়ের ডিজাইন সবসময় ওই করে দিত। ওর বোন যদিও দিদির থেকে আরেক ডিগ্রি উপরে ছিল।

এছাড়া তনুশ্রী যার কথা আগে বলেছি, ওর সাথেও এখানেই পরিচয় হয়।

আরেকটি মেয়ে নাম ভুলে গেছি ক’দিন আমাদের সাথে ক্লাস করে। ভিষণ তুখোড়! বলতো বাংলাদেশ থেকে এসেছে। বাবা-মা নেই। কাদের বাড়ি যেন থাকত। সাঁইবাবার মত মাথার চুল। খুব জোর দিয়ে সব কথা বলত। ঠিক-ভুল হোক তোমায় মানতে হবে। প্রায়ই খিট-মিট হত। ও মাঝেমাঝে বসে ওকে কি লড়াই করে পড়া চালাতে হচ্ছে সে কথা বলত। হঠাৎ খুব অসুস্থ হল। সবাই খোঁজ করতাম। তারপর সুস্থ হয়ে হাসতে হাসতে স্কুল করতে এলো, কিন্তু ক’দিন পরেই আবার বেপাত্তা। শুনলাম দেশে নাকি ফিরে গেছে। ক’দিন বেশ ফাঁকা ফাঁকা লাগত।

এছাড়া কিছু গ’র্মেন্ট গার্লস স্কুল থেকে খুব সুন্দরী মেয়ে এসেছিল। তারাই প্রায় টপার হত। তাদের আলোচনাও বেশ উচ্চমার্গের হত। ওরা নিজের দল করে থাকত, আর জেলা স্কুলের সব টপার ছেলেগুলো ওদের বয়ফ্রেন্ড ছিল এটুকুই মনে পরছে।


ওবার এই স্কুলের কথা বলি। সদর গার্লস স্কুল জলপাইগুড়ির সবচেয়ে পুরানো স্কুলগুলোর মধ্যে অন্যতম। এক সাইডে। পাশ দিয়ে করলা নদী বয়ে যাচ্ছে। গেটের সামনে দিয়ে চলেগেছে ব্রিজ়। স্কুলের গা ঘেষে কিন্তু খাপছাড়া রকম ওপরে। তাই ওই ব্রিজের উপরে ওঠার রাস্তাটা ছিল খুব মজার! একদম খাড়া! নামতে বেশ ভয় করত!

আর স্কুলে যেতামতো রিক্সায় চেপে! সামনে চারজন ছোট মেয়ে। বড় আমরা দু’জন সিটে। আমার বাড়ি থেকে স্কুল পৌছাতে ঘন্টা খানেক লেগে যেত। শাড়িটা জরিয়ে উঠে গোল হয়ে বসে থাকতাম। স্কুলে আবার সেটার উপর এক্সপেরিমেন্ট হত।

স্কুলের কাছাকাছি পৌছলেই একটা ঠান্ডা হাওয়া করলা থেকে উড়ে এসে গায়ে লাগত। পাশে করলায় তখন জেলেরা চাইনিজ বাঁশের কাঠামোর বিশাল জাল ফেলে মাছ ধরছে আর আকাশে বড় বড় চিলের ঝাঁক উড়ছে। প্রায়ই মাথায় জল পরত। ওদিকে গেলেই অদ্ভূত এক ভাললাগায় মন ভরে উঠত।

সদর গার্লস স্কুলে আরেকটা জিনিষ ভাল লাগত টিফিন। মাইনে সামান্যই হত। তার সাথেই টিফিনের টাকা নিয়ে নিত। আমাদের আর গ’র্মেন্ট গার্লস স্কুলের কিছু নাক উঁচু মেয়ে প্রথমদিকে ওই টিফিন নিত না, বাড়ির আনাই খেত। কিন্তু পরে দেখেছি তারাও সবার সাথে মারামারি করে খাবার নিচ্ছে। মানে মাসি প্রথমটা দিয়ে যেত। সবচেয়ে উঁচু ক্লাস বলে শেষে যা বাঁচত সেটাও আমরাই পেতাম তাই নিয়েই সবাই হইহুল্লোড় করে আনন্দ করতাম।

একবার কিছু দিন বাড়ি থেকে দুরে থাকতে হবে। সদর গার্লস স্কুলে হস্টেলও ছিল। পাপা সেখানেই দিল। কিন্তু এখানে অল্প মেয়ে, তারা সারাদিন ঘরেই থাকে। মাঠে যায় না। কেমন চুপচাপ ব্যাপার।
হয়ত মানিয়েই নিতাম। কিন্তু পাপা প্রতিদিন দেখতে আসত। বড়দিও দেখা করতে দিতেন। পাপাকে দেখলেই খুব অভিমান হত, কান্না পেত।
বড়দি ডেকে পাঠালেন, কেন ভাল লাগছেনা জিজ্ঞেস করলেন। আমি গোঁজ হয়ে দারিয়েই আছি! অনেক বকাবকির পর আমার কাছ থেকে যা শুনলেন তাতে খানিক্ষণ আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আমায় ছেরে দিলেন। আমায় পাপা আর বড়দি অনেক খোঁচাতে আমি নাকতলা হস্টেলের গল্প বলেছিলাম, সেই বিশাল বিশাল বাগান, মাঠ, ঠাকুরঘর, কত্ত মেয়ে!

এবার আমার ভার পরল আগে যে বাড়িতে থাকতাম, সে বাড়ির জ্যেঠিমার উপর। কিছুদিন মাত্র ছিলাম, কিন্তু এক অদ্ভূত অভিজ্ঞতা হয় সেসময়।
জ্যেঠিমাকে অনেকদিন ধরেই চিনি। খুব পরিষ্কার ফিটফাট। প্রতিদিন মাড় দেওয়া পাট করা শাড়ি পরেন। বাড়িতে কুকুর, বিড়াল আছে। তারাও যেন জ্যেঠিমার শাসনে সব সবসময় ফিটফাট! ছোট্টখাট মানুষ। খুব কথা বলেন। পান খান। পি.এন.পিসি. করতে খুব ভালবাসেন। ওনার মেয়ে বিটুদি আমাদের স্কুলে পড়ত হাত ধরে স্কুলে যেতাম। তখন যদিও বিয়ে হয়েগেছে।

তো, জ্যেঠিমা প্রতিদিন স্কুলে যাবার আগে ভাত খাওয়াতে বসতেন। আর, আর একটু খা, আর এক গ্রাস খা, এটা একটু দিই, ওটা দিই –করেই যেতেন। আমায় ওভাবে কেউ কখনও খাওয়ায় নি। খুব ভাল লাগত। আমি এমনি বেশ চুপচাপ তবু বেশ একটু হ্যা-না করতাম ইচ্ছে করে জ্যেঠিমার ওই স্নেহটা পাবার জন্য। স্কুল থেকে এলেও দেখতাম কি সুন্দর করে ফল সাজিয়ে রাখতেন। আমাকে হাতে করে প্রায় খাইয়েই দেন! তখন খুব লজ্জা লাগত। এখন ভেবে খুব আনন্দ হচ্ছে।

ধিরে ধিরে ফাইনাল ঘাড়ের কাছে চলে এলো। এসময় স্কুলে বড় উৎসব হল, বেশ কিছু দিন ধরে। তারপর টেস্ট। কি পরীক্ষা দিয়েছি আর মনে নেই, তবে স্কুলে আমাদের জন্য স্পেশল রান্না হত টিফিনে –সেটা মনে আছে। টেস্টে প্রচুর ফেল করালো। রুবি নামে খুব সুন্দরী একটি মেয়ে ছিল। শান্ত বলেই জানতাম। তাকেও আটকাল। সেবারই প্রথম দেখলাম মেয়েদের আন্দোলন। স্কুল গেট আটকে, বাইরে যারা ফেল করেছে তারা ধর্না দিচ্ছে। স্লোগাল উঠছে। শান্ত রুবি চেঁচিয়ে গলা ফাটিয়ে তাদের লিড করছে। তারপর যদিও সবার সামনে বড়দির কাছে ক্ষমাও চাইতে হয়!

এই স্কুলে প্রথমে যিনি বড়দি ছিলেন, তাকে বিশেষ মনে নেই কারণ তিনি আমাদের সেন্ট্রালের বড়দির একদম বিপরীত ছিলেন বলেই হয়ত। পরেতো পর্ণাদি বড়দি হয়ে এলেন।

একজন দিদি ছিলেন তার ক্লাস কোনদিনও করিনি। কিন্তু সকলের চেয়ে বড্ড অন্য রকম। স্টুডেন্টরা নাম দিয়েছিল ‘শকুন্তলা’। তার প্রতিদিনের সাজ ছিল দেখার মত, শান্তিনিকেতন স্টাইল। শান্ত কিন্তু নন। খুব ছটফটে। আমাদের দিদিমনিরা একদম সাজতেন না। টিপিকাল দিদিমণি, একটু বেশিমাত্রায় গম্ভীর! কিন্তু ইনি মাঠের মাঝেও হাত-পা নেরে খুব হেসে হেসে কথা বলতে পারতেন। পরে কোন এক অফ পিরিওডে উনি আমাদের সাথে বন্ধুর মত গল্প করছিলেন। একটি খুব মোটা মেয়েকে এমন হবার কারণ জিজ্ঞেস করলেন। সবাই ওনার কথা জিজ্ঞেস করতে, বল্লেন উনি নাকি দু’বেলা ঘর মোছেন। এরমত ভাল ব্যায়াম নাকি নেই। পরে শুনেছিলাম ওনার নিজের সন্তান নেই বলে কাজের লোকের ছেলেটিকে দত্তক নেন।

সবচেয়ে যার কথা মনে পড়ে তিনি ছোট কৃষ্ণাদি। আরেকজন ছিলেন তাই একে ছোট বলা হত। ভিষণ গম্ভীর মুখে খুব মজার মজার গল্প বলতেন। আমাদের জিওগ্রাফি নিতেন। এই সাবজেক্টে ওনার উৎসাহে আগ্রহ বারে। এই ছোট কৃষ্ণাদি একদিন খুব মনমরা হয়ে ক্লাসে বসে, সবাই কি হয়েছে! ঘিরে ধরলাম। গম্ভীর কৃষ্ণাদি কেঁদে ফেললেন। ওনার দাদার পায়ে ক্যান্সার হয়েছে, খুব সিরিয়াস অবস্থা। পায়ের সামান্য একটা কড়া কি সাঙ্গাতিক রোগ ডেকে আনল!

আরেক দিদি ছিলেন কুমকুমদি। এনাকেও ক্লাসে কখনও পাইনি তবে মুখোমুখি দেখা হলেই হাসতেন। এসময় আমার দাঁতে একটা সমস্যা দেখা দেয়। ডাক্তার দেখানো হল। মাঝে মাঝেই যেতে হত। ডাক্তার খুব ভাল মানুষ। কাজ করতে করতে গুন গুন গান করেন। বাড়িতেই ক্লিনিক। একদিন ডাক্তার দেখিয়ে বেরছি, দেখি কুমকুমদি গাউন পরে একটা টুলে দারিয়ে ঝোলানো টবে রং করছেন। দু’জনেই অবাক! পরে যানলাম উনি ডাক্তারবাবুর স্ত্রী। ওনার মেয়ে আবার আমার সাথে ক্যারাটে শিখত!

ধিরে ধিরে ফাইনাল এসে গেল। কি পড়াশুনা করলাম ভগবান যানেন! দূগ্‌গা বলে একরকম ঝাপ্‌ দিলাম! ভাগ্য একটু ভাল ছিল সিট পরল আগের স্কুলে। অফসন পরীক্ষার দিন আধঘন্টা পরেই একটি মেয়ে খাতা দিতে উঠল। ছবিদি খাতা নেবেন না, বল্লেন ভাল করে দেখ! একঘন্টা অন্তত বোস! মেয়েটি সেটুকু সময় বসেই খাতা দিয়ে কেটে পড়ল। তারপর টিচারদের মধ্যে তার খাতা নিয়ে হাসাহাসি শুরু হল। কি কান্ড! না, মেয়েটি খাতায় বসে বসে ‘চন্দ্রকান্তা’ সিরিয়ালের ছবি আর গল্প লিখেছে। হা...হা!

শেষে রেজাল্টও বের’ল! টাউনে যেতে হবে, আমি রেডি হচ্ছি! তার আগেই পাপা টুক্‌ করে কখন বেরিয়ে গেছে। আমি বেরতে যাব পাপা আনন্দ করতে করতে এসে বল্লো পাশ করেছি। যদিও নম্বর আশানুরূপ হলই না। যারা পড়াতেন খুব রেগে গেলেন! আমার লজ্জা লাগছিল। পাপা সারা বছর লুনায় করে টাউনে পড়াতে নিয়ে যেত! কিন্তু পাপা কক্ষণ আমায় কিছু মুখে বলেনি, হয়ত কষ্ট পেয়েছিল। আমার নিজেরই নিজের উপর খুব রাগ হয়েছিল! কিন্তু সারা বছর সিনেমা দেখার ফল হাতে হাতে তখন পাচ্ছিলাম, আর কি!
(সকল চরিত্রের নাম পরিবর্তন করা হল)

মায়াপুর


























Run To You - Live at Slane Castle, Ireland.mp3

Followers