সুধা বন্টন ও রাহু-কেতুর বিবরণ:
এবার সৌতি বললেন -সাবধান মুনিগণ, শ্রবণ করুন। পূর্বেই হরিহরের মিলনের কথা বলেছি।
এদিকে দেবতারা দৈব প্রভাবে চেতনা পেলেন। অসুরেরাও জাগল। তারা কোথায় কন্যা, কোথায় কন্যা বলে বিষ্ণুকে খুঁজতে শুরু করলেন।
সকলে মোহিনীকে ঘিরে দাঁড়াল। সকলে ছবির পুতুলের মত দেবীর দিকে তাকিয়ে থাকল।
নারায়ণ তখন বললেন -এই ক্ষীরসিন্ধুর মধ্যেই আমার বাস। আমার নাম মোহিনী। আমি অযোনি সম্ভুতা। তোমাদের কলহ আমি সহ্য করতে না পেরে এখানে উপস্থিত হয়েছি। কি কারণে তোমরা কলহ করছ!
এই কথা শুনে সকলে বলল, অমৃতের কারণে সুরাসুরের এই দ্বন্দ্ব।
তারা বলে দেবীর আগমনে ভালই হল। এবার তিনিই সুধা ভাগ করে দিন।
প্রথমে দেবী মধ্যস্থতা করতে চাইলেন না।
তিনি বলেন -সকলে আমার বিধান নাও মানতে পারে! এর ফলে তারা আমার উপর ক্রুদ্ধ হবেন।
তখন দেবাসুর সকলে এক সাথে বলে যে তারা দেবীর সিদ্ধান্ত মেনে নেবে।
মোহিনীরূপী হরি তখন সুধাভান্ড নিয়ে এক দিকে দেবতাদের ও অন্যদিকে অসুরদের দুই সারিতে বসালেন। তিনি কাঁখে সুধাভান্ড নিয়ে সুধা বন্টন শুরু করলেন। দেবতার জ্যেষ্ঠভাগ বলেন মোহিনী এবং দেবতাদের আগে সুধা বিতরণ করেন। দৈত্যেরা তা মেনে দিল। এভাবে তিনি দেবতাদের অমৃত পান করাতে থাকেন। এভাবে তেত্রিশ কোটি দেবতাদের সুধাদান করে বাকিটা তিনি নিজে খেয়ে নিলেন।
এই সময় চন্দ্র ও সূর্য তাঁকে ডেকে বলেন যে দৈত্য রাহু দেবতার রূপ নিয়ে সুধা পান করেছে।
এই শুনে নারায়ণ সুদর্শনচক্রের সাহায্যে রাহুর মুন্ড দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করেন।
যদিও রাহু মারা গেল না, কেননা সে অমৃত পান করেছে। তার মুন্ড হল রাহু ও দেহ হল কেতু।
দৈত্যদের বঞ্চিত করায় তারা ক্রোধে জ্বলে উঠল। কিন্তু ততক্ষণে অমৃত গোপনস্থানে রাখা হয়ে গেছে। দৈত্যরা দেবতাদের মারতে গেল। এভাবে দেব ও দৈত্যের যুদ্ধ শুরু হল।
অমৃত পান করে দেবতারা শক্তিশালী হয়েছিল। দৈত্যরা তাদের পরাজিত করতে পারল না। তারা রণে ভঙ্গ দিয়ে নিজেদের স্থানে ফিরে গেল। দেবতারাও স্বর্গে ফিরে গেলেন।
..................
Blog Archive
Saturday, June 19, 2010
Subscribe to:
Posts (Atom)