Blog Archive

Tuesday, April 2, 2013

কথাচ্ছলে মহাভারত - ৪৪

দুর্য্যোধনকে পরিত্যাগ করিতে বিদুরের মন্ত্রণা ও দুঃশলার জন্ম–বিবরণঃ

বিদুর রাজাকে বললেন এই পুত্রের জন্মের সাথে সাথে চারদিকে অমঙ্গল দেখা দিয়েছে। এর প্রায়শ্চিত্ত এই যে পুত্রটিকে পরিত্যাগ করা উচিত। এই পুত্র কুলের কলঙ্ক হবে, একে পালন করলে রাজাকে অশেষ দুঃখ পেতে হবে। নিজের কুলের মঙ্গল যদি রাজা চান তবে এক পুত্র বিনা নিরানব্বই পুত্রেই রাজাকে সন্তুষ্ট হতে হবে। এই কুলাঙ্গার শিশুটি আসলে অধর্মেরই রূপ। কুলের কারণেই রাজার এই একজনকে ত্যাগ করা উচিত। গ্রামের কারণে রাজা কুল ত্যাগ করেন, জনপদের হিতের কারণে রাজা গ্রাম ত্যাগ করেন। এমনকি নিজেকে রাখতে রাজা পৃথিবীকেও ত্যাগ করেন। এরূপ নীতিশাস্ত্রেও পূর্বে অনেকবার হয়েছে। রাজা বংশরক্ষার্থে জ্যৈষ্ঠ পুত্রকে হত্যা করুন।
 

কিন্তু পুত্রস্নেহে অন্ধ রাজা ধৃতরাষ্ট্র বিদুরের কথা অমান্য করলেন। এভাবে রাজার একশত পুত্র ও একটি কন্যা জন্মাল।

এতকথা শুনে জন্মেজয় প্রশ্ন করলেন, ব্যাসের কথানুসারে রাজার শতপুত্র হল, কিন্তু কন্যাটি কি কারণে জন্মাল!

মুনি বলেন শুন কন্যার জন্মের কারণ।

ব্যাসদেব যখন মাংসপিন্ডটি খন্ডন করছিলেন তখন সুবলকন্যা, সতী-পতিব্রতা গান্ধারীর মনে কন্যাপ্রেম জাগ্রত হল। তিনি কায়মনোবাক্যে একটি কন্যা প্রার্থনা করলেন।
 
পতিব্রতা, দানশীলা, পবিত্র স্ত্রীর কামনার জোড়ে মাংসপিন্ডটি একশত এক খন্ডে খন্ডিত হল। 

দেখে ব্যাসদেব গান্ধারীকে বললেন-মুনির বচন কখনও মিথ্যা হয় না। তার বচনে রাণী শতপুত্রের জননী হলেন। কিন্তু পবিত্র রাণীর মনের জোড়ে একটি কন্যার জন্ম দিলেন। 

 

সব শুনে রাণীও হরষিত হলেন। এভাবে রাণী শতপুত্র ও একটি কন্যার জননী হলেন। কন্যার নাম রাখা হল দুঃশলা।

ধৃতরাষ্ট্রের অন্যা নামে আরেক স্ত্রী ছিলেন। তিনি বৈশ্যের কন্যা। অন্যা ধৃতরাষ্ট্রের অনেক সেবা করেন। তারও একটি পুত্র জন্মায়। তার নাম যুযুৎসু। 

 
যুযুৎসু

ধৃতরাষ্ট্রের পুত্ররা একত্রে বড় হতে থাকেন। যৌবনপ্রাপ্ত হলে সকল কুমার রাজার কন্যাদের বিবাহ করেন। রাজা দুঃশলাকে জয়দ্রথের সাথে বিবাহ দেন। 

এভাবে বৈশম্পায়ন কৌরবদের জন্মকথা রাজা জন্মেজয়কে শোনান।
.....................................

Run To You - Live at Slane Castle, Ireland.mp3

Followers