Blog Archive

Wednesday, December 2, 2009

আমার বন্ধুরা ... (পর্ব-১)

আজ আমার ছোটবেলা থেকে যে যে বন্ধুর কথা মনে আসছে তাদের সম্পর্কে বলবো।

খুব ছোটবেলা পাড়ার নার্সারী স্কুলে পড়তাম। এখানে আমাদের বাড়ির সব বাচ্চারাই পড়ে। এখানে মনে আছে মাটিতে আসন পেতে বসতাম আর বিয়ে বিয়ে খেলতাম(হাঃ...হাঃ!)। একবার খুব অসুস্থ হলে সব বন্ধুরা বাড়িতে দেখতে আসে। কিন্তু আফসোস কারো নাম মনে নেই।

খুব ছোটতে দিদা গানের স্কুলে ভর্তি করে দেয়। কাকিমারাও ওখানেই গান শিখত। হারমোনিয়ামটা পেল্লাই লাগত। গানের স্কুলে আমায় বড়দের সাথেই গাইতে হত। একবার পোগ্রামে সবচেয়ে ছোট বলে একদম সামনে দাড় করিয়ে দিল। এদিকে মাইকটাও অনেক উঁচুতে, পাড়ার দুই দাদা বোধ হয় তারপর ঠিক করে দেয়। এরা একবার আমাদের বাড়ির ছাদে ঘুড়ি ওড়াতে আসে, দাদু উঠতে দেয় নি, যেটা আমার খারাপ লাগে।

এরপর মনেপরে লেক গার্লস স্কুলে পড়ি। খুব বন্ধু হয় শ্বাস্বতী। ওর বাড়ি কাছে ছিল। বলত স্কুল থেকে বেরিয়েই নাক বরাবর গেলেই ওর বাড়ি, কিন্তু স্কুল থেকে বেরলেই নাক বরাবর দেওয়াল ছাড়া কিছুই চোখে পরত না।

আমি স্কুল বাসে যেতাম। বাস খুব ঘুরে ঘুরে স্টুডেন্ট তুলত। এ রকম একদিন গলফগ্রিনের বাস স্ট্যান্ডে একজন বেঁটে গোল মত হাসি খুশি লোককে দেখে বাসকাকু আর দিদিরা খুব খুশি হয়। আমরা বাস থেকে নামলে উনি সবার সাথে হাত মেলান। উনি সবার মত স্ট্যান্ডে না দাঁড়িয়ে মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাই স্কুলের গাড়ী দাড়িয়েছে ভেবেছিলাম। কিছুদিন পর একটা সিনেমা দেখে তাকে চিনি তিনি -রবি ঘোষ।

আমি বহু স্কুলে পড়ি। লেক গার্লসে পড়তেই প্রথম আমি পাপার সাথে ডবল ডেকার বাসে চড়ি। লেক গার্লস ছাড়ানোর কারণের পিছনে একটা মজার ঘটনা আছে। তখন আমাদের পরীক্ষা চলছে। বাস খুব দেরি করে এলো। এত্তো মেয়েদের নিয়ে আরো দেরি করে স্কুল গেল। বড়গেট বন্ধ করে দিয়েছে! বড়দি খুব রাগী আর লম্বা-চওড়া মহিলা ছিলেন। উনি বেরিয়ে এসে কোমরে হাত দিয়ে বাস-কাকুদের তুমুল বকতে লাগলেন। সেই ফাঁকে একটি দিদি তার পায়ের ফাঁক দিয়ে বা পাশ দিয়ে স্কুলে ঢুকে গেল। এদিকে শাস্তি স্বরুপ বাসের স্টুডেন্টদের স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হল না। সকালের স্কুলে বাচ্চারাই যেতাম। বাস কাকুরা ফাঁপরে পরল! আমাদের অনেক লযেন্স দিল, বড় বড় পেন্সিলও! তারপর কোথায় যেন সব ঘুরতেও গেলাম, মনে হয় শেয়ালদা স্টেশনের ব্রিজে বাস দাড়িয়ে ছিল, কারণ ওই ঘড়িটা মনে আছে। শেষে স্কুল ছুটি হলে সেই দিদিটাকে নিয়েই বাড়ি ফিরলাম। অন্যদের খবর জানি না, তবে আমায় কেউ কিছু জিজ্ঞেস করেনি, তাই বলিও নি! পরে রেজাল্ট বেরলে ওই দিনের পরীক্ষায় এবসেন্ট লেখা দেখে তো দাদু ক্ষেপে লাল! তখন সব সামনে আসে। বাস ছারিয়ে দাদুই গাড়িতে ক’দিন দেওয়া নেওয়া করে।

তারপর বাড়ির কাছের স্কুলে ভর্তি হই। সেখানের স্মৃতি বলতে মনে পড়ে ‘অবাক জলপান’ নাটক করেছিলাম। এখানে লেখাপড়া হোচ্ছে না বলে তারপর হোস্টেলে চলে আসি আর আমার সাপে বর হয়-এর আগের সব স্মৃতি ঝাঁপসা।

হোস্টেলে আমি বাঁধা গরু ছারা পাই-মনের সুখে খুব আনন্দে থাকি। হোস্টেলের গল্প আগেই বলেছি। এখানে আমার বন্ধু হয় চৈতালী আর রুমকি।

রুমকিটা একটু ক্ষেপি গোছের ছিল। দেখতে খুব সুন্দর। আমি ওর ছবি আঁকতাম। অনেক বই পড়েছে, অঙ্কে তুখোড়! আমার চেয়ে এক ক্লাস নিচে পড়ত। তবু আমরা খুব বন্ধু ছিলাম। ওর লম্বা লম্বা কড়ে আঙ্গুলগুলো বাইরের দিকে অদ্ভুত রকম বাঁকা ছিল। ও বলত ও আগের জন্মে কৃষ্ণ ছিল।

চৈতালী বর্ধমানের কোন গ্রাম থেকে এসেছিল। ওদের বাড়ির সামনেই পুকুর ছিল। ও গল্প করত বহুদূরে স্কুল, ফিরতে ফিরতে সন্ধে হয়ে যেত। তবু ফিরে ওই পুকুরে ডুব না দিলে ওর ঠাকুমা ওকে ঘরে ঢুকতে দিত না। ওর বাবা মারা গেলে মা ওকে নিয়ে চলে আসে।

এছাড়া হোমেও ক’জন বন্ধু ছিল। তারা মাঝে মাঝেই লুকিয়ে হোস্টেলের পিছন দিকে জড় হত। তখন ওরা মোমবাতির উপর চামচে বোরোলিন গরম করে সূচ দিয়ে কান ও নাক বিঁধত। আমরা সূচ আর বোরোলিন সাপ্লাই করতাম। আমাদেরও করে দেবে বলত। চৈতালীই একবার করে। পরে আমাদের সুপার সবিতাদির কাছে বকুনি খায়।

চৈতালীর মাথায় খুব চুল ছিল। যেমন লম্বা, তেমনি গোছ! অথচ ও সার্ফ দিয়ে মাথা ঘষত, দিদিরাও অবাক হত। আমাদের সবিতাদি খুব নিয়মে রাখতেন। মাসে একবার স্যাম্পু। রুমকির মামারা এই বড় বড় সানসিল্ক দিয়ে যেত। ও আমাদের সবাইকেই মাখতে দিত। তবে রুমকি আমাদের চেয়ে বেশ কিছু বড় ছিল। ফলে আমরাও ওর কাছে বহু এঁচোড়ে পাকা সব তথ্য পাই।



হোস্টেল থেকে নিজে জেদ করে চলে আসি ততোদিনে পাপা জলপাইগুড়ি চলে এসেছে। এখানে বন্ধু হয় বাপ্পা আর যাদের বাড়ি প্রথমে ভাড়া ছিলাম, সে বাড়ির ছেলে শুভ। আমরা তিনজন পাপার এনে দেওয়া বিভিন্ন ধরনের গেম খেলতাম। ওরা জেলা স্কুলে পড়ত। আমি সেন্টাল স্কুলে ভর্তি হলাম। পাপার বন্ধুর মেয়েও ওই স্কুলে টুয়েলভে পড়ত, তার নামও দীপান্বিতা। আমায় খুব ভালবাসত । টিফিনে নিজের কাছে নিয়ে যেত। তবে বেশিদিন দীপান্বিতাদিকে পাইনি।

ক্লাস সিক্সে আমার বন্ধুত্ব হয় সম্পার সাথে, পাশাপাশি বসার সূত্রে। পরের বছর থেকে সেকশন চেঞ্জ হতে থাকে, দূরত্ব বাড়তে থাকে। পরে সে বন্ধুত্ব দৃঢ হয় কলেজে গিয়ে, যা এখনও অটুট। এই ক্লাসে সম্পা ছারা কবিতা, অঞ্জুদের সাথেও বন্ধুত্ব হয়।

অনেক বছর পর যখন কলেজে বেশ ডানা গজাচ্ছে! তখন সম্পা আর আমি পাহাড়পুরের দিকে যাই, রাস্তা বেশ দূর। ওখানেই কবিতা, অঞ্জুরা থাকত। সে সময় কবিতার বোন বোধ হয় মারা যায়, হঠাৎই। কাকিমা খুব কাঁদছিলেন। তো কথা বলতে বলতে কবিতার ঘরে এলাম। ওর ঘরে ঢুকতেই ও দরজার উপর একটা মাঝারি সাইজের ঝোলান ছবি দেখিয়ে বললো দেখ। হাতে আঁকা ছেলেমানুষি ছবি। একটা চুড়িদার পরা মেয়ে। রংটা বেশ উজ্জ্বল। দেখে ভাবলাম সেই বোনের আঁকা হয়ত! বল্লাম বাঃ বেশ এঁকেছে! তাতে কবিতা হেসে বল্ল এটা তোরই আঁকা। নতুন ক্লাসে অন্য সেকশনে চলে যেতে ওকে এঁকে দিই। তাও ছয়-সাত বছর আগেকার ঘটনা। সামান্য ছবিটা কেউ এত্ত সুন্দর করে রেখে দেয়! দেখে যেমন লজ্জা পেয়েছিলাম, তেমনি অভিভূতও হই।

ওর বাড়ি থেকে কিছু দুরেই অঞ্জুদের বাড়ি। কি বলবো, এখনও কল্পনা করি ওমন বাড়িতে থাকব। কারোর অবস্থাই খুব ভাল ছিল না। অঞ্জুদের বাড়িটা দুর থেকে কবিতা দেখাল। কোথায় বাড়ি! খালি সুপুরীর বন মনে হল। আমরা তিনজন এগোলাম।
রাস্তা থেকে ওদের সীমানা একটু উপরে। সুপুরী গাছের শেকড় যেন স্থানটাকে ধরে উঁচু করে রেখেছে। সম্পা সাইকেল চালিয়ে ক্লান্ত। অঞ্জু বললো আগে জল খেয়ে নে’। সেই সুপুরীর বনের নিচে কুয়ো। বাইরে রোদ কিন্তু সে স্থানটা কি যে ঠান্ডা-গাছের ছায়ায়, কি বলল! আর তেমনি ঠান্ডা আর মিষ্টি সে কুয়োর জল। অঞ্জুদের সাধারণ কাঠের বাড়ি আর টিনের চাল। কিন্তু সব কি পরিষ্কার! টিপ্‌-টপ্‌। স্কুলে যে সেলাই করেছি সেগুলোই আসবাবে ঢাকা দেওয়া। শেষে বাড়ির অন্য দিকে গেলাম। গিয়ে যেন অন্য ভুবন দেখলাম। কিছুদুর থেকে সবুজ ধানক্ষেত, যেন আমাদের দেখে আনন্দে হেলে-দুলে হাসছে। চারদিকে অদ্ভুত মিষ্টি হাওয়া। জানিনা সে দৃশ্য বোঝাতে পারলাম কিনা। কিন্তু আমি চোখ বুজলেই অঞ্জুর বাড়ি আর চারপাশের প্রকৃতি এখনও দেখতে পাই।

ক্লাস সেভেনে উঠলাম। নতুন সব বন্ধু। আমি বরাবর মাঝারি ধরনের শান্ত-শিষ্ট স্টুডেন্ট। আমার পাশে বসল-সুদীপ্তা। আমি কি শান্ত! ওকে দেখতে হত। মুখে রা-টি নেই! পড়া ধরলেও প্রায়ই সেই অবস্থা। ওর মত ঠান্ডা মেয়ে আমি দেখিনি। আমি বেশ অত্যাচার করতাম ওর উপর, মনে আছে। প্রায়ই তখন এমনি এমনি নাকি আমার পা ব্যাথা করত, আর আমি ওর কোলে পাটি তুলে বস থাকতাম। পড়ায় আমার বেশি মন লাগত না। সেকেন্ড বেঞ্চে ঘাপটি মেরে বসে থাকতাম। বরাবর ছোট-খাট, পড়া ধরার টাইমে আররো ছোট্ট হয়ে যেতাম। যে টিচার বেশি বকে না তার ক্লাসে আপন মনে বসে নিজের খাতায়, পাশের জনের খাতায় হিজিবিজি আঁকতাম। সচরাচর সবাই খাতা টেনে নিত। এই সুদীপ্তা কিন্তু কিছু বলত না। এমনকি আমায় গল্পের বইও সাপ্লাই করত। অনেকদিন পর ওকে আসাম মোড়ে একবার দেখি। সেই লাজুক হাসি। সঙ্গে কাকিমা ছিলেন।

এরপরের বছরগুলো কাকে কখন পেলাম ঠিক মনে নেই। তবে কিছুজনের কথা না বল্লেই নয়।

সীমা-যাকে মার্‌কামারা মেয়ে বলে। আগে থেকেই চিনতাম। তখন এক ক্লাস উঁচুতে পড়ত। এবার আমার সাথে বসল। বোধ হয় ক্লাস নাইন।
উমা দেওয়ালের দিকে ধারে বসত। শান্ত, সাধাসিধে, মারওয়ারী ছিল, চোখে চশমা। তার পাশে আমি, আমার পাশে কুমকুম-গলাটা অসম্ভব নেকি-নেকি। সবাই ওকে ক্ষেপাতোও! ও বলতো ছোটবেলায় ও নাকি কাকে নকল করত, এখন এমনই হয়ে গেছে। তার পাশে বসতেন সীমা। অথচ সীমার পিছন দিকে বসার কথা। টিচার চোখের সামনে রাখবে বলে ওকে সেকেন্ড বেঞ্চে রাখেন। ওর সামনে মোহিনী সুর। ফাস্টগার্ল ভিষণ মিষ্টি দেখতে কিন্তু বেশ গম্ভীরও। পেছন ফিরে বসত, দুদিকে ছোট বিনুনী, ঘাড়ের কাছে একটা ছোট্ট সাদা স্পট। ওর বাবা দুবাইতে চাকরী করতেন। দীপ্তি সিনেমা হলের পাশে ওদের সুন্দর দু’তলা বাড়িতে বড় বারান্দায় খুব সুন্দর একটা দোলনা ঝুলত, যা ওদিক দিয়ে গেলে বরাবর চোখে পরত। মোহিনী এখন USA থাকে।

যার কথা বলছিলাম। সীমা-ছোট হাইট। কিন্তু একদম ঠিক-ঠাক। নাকটা একটু চাঁপা। গায়ের রঙটাও। ভিষণ চটপটে। মুখে সব সময় একটা দুষ্টু-মিষ্টি হাসি লেগে আছে। এখন মনে হয় সেই ‘শাস্তি’ গল্পের চন্দরাই যেন সে ছিল। সীমা খুবই চটুল ছিল। জলপাইগুড়ি একটু শহরতলি। আমরা কলকাতার খবর কাগজ একদিন পর পেতাম। কিন্তু সীমা লেটেস্ট হিন্দী সিনেমার নায়িকার চুলের কাটটি বোধ হয় জলপাইগুড়িতেই সবার আগে কেটে নিত। তেমনি ড্রেসও। যে কোন ছুটির আগে রঙিন ড্রেসে সবাই স্কুলে আসলে সীমাকে দেখতে হত।

আমাদের স্কুলের উল্টোদিকে ছেলেদের স্কুল। টিফিনে সীমাদের গ্যাংটা স্কুলের পিছনে চলে যেত আর উঁচু পাচিল টপকে নাকি চিঠি উড়ে আসত। সবই শোনা। অথচ দুই স্কুলের মাঝে বড় রাস্তাও ছিল। সীমারা অফ পিরিওডে গুজগুজ করে বিভিন্ন ধরনের গল্প করত। কুমকুম সঙ্গে থাকত। আমি তেমন পাত্তা পেতেম না, কারণ টাউনে থাকতাম না, কোথায় কি হচ্ছে তাও যানতাম না।

তবু সীমাকে কেন যানি আমার ভাল লাগত আর ও-ও আমায় বেশ স্নেহ করত। এ সময় বাপ্পা হোস্টেলে। আমরাও ভাড়া বাড়ি ছেরে আসাম মোড়ে বেশ একটু নির্জন স্থানে। আর বিভিন্ন কারনে আমি আরো অন্তর্মুখী হচ্ছি। শেফালী দি পিটির টিচার। কোন কারনে একটা দলবদ্ধ নাচ করতেই হবে। উনি খুব রাগী ছিলেন। এদিকে সেই কোন ছোটকালে হোস্টেলে দু’-একবার নেচেছি। লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করত। তখন এই সীমা কেন যানি সব সময় আমার সঙ্গে সঙ্গে থাকত আর খুব ভাল হচ্ছে বলে উৎসাহ দিয়ে দিয়ে ফাইনালটা উৎরে দিয়েছিল।

পরে আবার আমি স্কুল চেঞ্জ করি। সীমাও শিলিগুড়ি চলে যায়। কলেজে থাকাকালিন রাস্তায় হঠাৎ হই-হই করে চিৎকার! সম্পা সঙ্গে ছিল। ঘুরে দেখি সীমা। আমাকেই ডাকছে। সঙ্গে অনেক সঙ্গি-সাথী। সম্পা বিশেষ খুশি হয়নি, সরে গেল। সীমা আমার খোঁজ খবর নিল। নিজের তালেই থাকে। খুব আনন্দ করতে পারে। সবার সাথে হই-হই
করে পরিচয় পালাও সাঙ্গ হল।

কলেজে কুমকুমের সাথেও বহুদিন পর দেখা হয়। ওর স্বপ্নের রাজপুত্রের গল্প আমায় ক্লাসে শুনতে হত। শেষে ওদের পাশের পাড়ায় তার সাথে কুমকুমের আলাপও হল। তখন শুরু হল রাগ-অনুরাগ পালা। তাও আমরা বন্ধুরা হ্যান্ডেল করতাম।

শেষে কলেজে তার সাথে কুমকুম আমার আলাপ করাল। দেখে আমার কল্পনা একেবারে ভেঙ্গে চুরচুর হয়ে গেল। কম বয়সের প্রেম বলে হয়ত! কুমকুম বলত এই লম্বা! অথচ যে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সে কুমকুমের সমান। কুমকুম গল্প করত প্রচন্ড রাগী। অথচ শান্ত, একটু ভিরু ভিরু রোগা পাতলা ছেলে, হাতটাও অসম্ভব ঠান্ডা! তার সামনেই কুমকুম সেই আগের টোনেই গল্প করছে -দীপান্বিতা, মনে আছে! তুই টিফিনে স্কুলে কুকুরদের বসে বসে রুটি খাওয়াতিস! ভাব! মনে হচ্ছিল দিই ঠাস করে! হাঃ...হাঃ! আসলে কুমকুমটা বরাবরই একটু আদুরে টাইপের, আমরা সবাই ওকে খুব ভাল বাসতাম।

আমার সাথে ওর বন্ধুত্বের আরেক কারণ ওর বোন মালিনী। ও আমাদের থেকে দু’তিন ক্লাস নিচে পড়ত । খুব সুন্দরী আর এক থেকে তিনের মধ্যে সব সময় থাকত। মালিনী ছিল যেমন সিনেমা খোড়, তেমনি গল্পের বইয়ের পোকা। আমরা কুমকুমের মাধ্যমে বই আদান-প্রদান করতাম। মালিনী ডিবেটেও যেত টিচাররা খুব পছন্দ করতেন। একবার ওর নোট খাতার সাথে সিনেমার ডাইরি ওলোট-পালোট হয় আর তা টিচারের হাতে পরে। বহুত বকুনী খায়, কেবল প্রচন্ড ভাল মেরিট বলে রক্ষা পায়।

এবার দু’জনের কথা বলব। এরা হচ্ছে তপতি ও কুসুম। তপতিকে দেখতে একদম কপিলদেবের মত। ওর মধ্যে কেমন একটা উড়নচন্ডী ব্যাপার ছিল। অন্য সবাই ওকে প্রায় এড়িয়ে চলত। নরমাল মেয়েদের মত কক্ষণ গল্প করত না। এই কোথায় মারামারি হচ্ছে, ক্রিকেটের কে কি করল, ফুটবলে কোন দেশ কেন সেরা-এই ধরনের টপিক। আমি বরাবর মোটামুটি ভাল শ্রোতা। তপতির সঙ্গ কেউ তেমন চাইত না। আমার মনে হত ও কি বলছে বোঝা দরকার। শুনতাম। আদ্দেক বুঝতাম না। ওর তাতে কিছু এসে যেত না। ও হাত-পা নেরে প্রায় উত্তেজিত হয়ে উঠে দারিয়ে ঠিক কি কি ঘটেছে আমায় বোঝাবার চেষ্টা করত। তপতি পড়াশুনায় মোটামুটি ছিল। নাইনেই ওর মধ্যে একটা পরিবর্তন এলো। বেশ শান্ত হয়ে গেল। চুপচাপ থাকত। তারপর একটা চাপা গুঞ্জন। তপতি আর কুসুমকে নাকি সব যায়গায় একা দেখা যায়। টিফিনে দু’জন একা বসে থাকে!

এবার কুসুমের কথা বলি। আগে কখন চোখে পরেনি। শান্ত, পিছনদিকের বাঞ্চে বসত। হাতের লেখা পড়া যেতনা। টেনে সেকশন আলাদা হল। গুঞ্জন আরো বারলো। আমি আর তপতির সাথে কথা বলতাম না। তারপর আবার স্কুল চেঞ্জ হল। তখনও কিন্তু যারা টাউনে কোচিন পড়ত তাদের মাধ্যমে স্কুলে তপতি-কুসুমের নামে মুখরোচক কাহিনী শুনতাম। সত্যি বলতে প্রচন্ড একরকম ঘেন্না হত।

কিন্তু এসময় একটা খুব দরকারে আমায় আবার স্কুলে আসতে হল। আমি খুব সাধারণ ছিলাম। কেউ যে খুব চিনত তেমন না। ক’জন টিচার হয়ত মুখ চিনত। বন্ধুরা সবাই ছরিয়ে গেছে। আমি স্কুলে গেলাম। তখনও তপতিরা ওখানেই ইলেভেন-টুয়েলভ পড়ছে। ও কোথায় ক্লাস করছিল। রুম থেকে ঠিক দেখেছে। দৌড়ে চলে এলো। হাত ধরে কত্ত গল্প। আমায় দেখে খুব খুশি। কি কাজে এসেছি জিজ্ঞেস করে নিজেই লম্ফ-ঝম্প করে সব করে দিল। আমার খুব ভাল লেগেছিল। কৈ! ওতো সেই আগের মতই আছে। তখন বুঝলাম ও ওই আছে অন্যরা খারাপ কথা বলে মজা পাচ্ছে। টিফিনে কুসুমও এলো, তখনোও চুপ করে খালি মিষ্টি মিষ্টি হেসে চলেছে। তপতি বকবক্‌ করেই চলেছে। তবে কুসুমকে দেখে ওর চোখে অদ্ভুত একটা উজ্জলতা দেখলাম। আমারতো খুব মজাই লাগল। একটু যে অস্বস্থি হচ্ছিল না তা নয়!

এই তপতি-কুসুমের সাথে আবার যোগাযোগ হয় কলেজে গিয়ে। তখন আমার নাম A.C. College ও P.D. Collegeএ আছে। P.D. College এ টুরিজম নিয়েছি, কিন্তু শেষে অনারস না থাকায় A.C. Collegeএ চলে আসি। Collegeএ তপতিও টুরিজম নিল।

আমাদের প্রফেসর একদম কম বয়েসী, নতুন জয়েন করেছেন, খুব হ্যান্ডসাম। ফলে অন্য ক্লাসের মেয়েরাও এমনি ক্লাস করত। আর প্রায়ই উল্টো-পালটা প্রশ্ন করে স্যারকে নাজেহাল করত। স্যার বোধ হয় সদ্য জয়েন করেছিলেন। বেশ ঘাবড়ে যেতেন। গিজ গিজ করছে চারদিকে মেয়ে উনি বড়বড় পা ফেলে মাথা নিচু করে হনহন্ করে হেটে যেতেন। এনার সাথে আবার দেখি তপতির খুব ভাব। উনিও কেবল তপতির কাছেই ফ্রি হতেন। আমাদের নিজেদের বহু কাজ করতে হত স্যারের সাথে, নোটের চেয়ে বই পত্তর নিয়ে ঘাটাঘাটি, স্যার তপতিকে প্রায় শিক্ষন্ডী করে মেয়েদের থেকে দুরে থাকার চেষ্টা করতেন। মেয়েরাও খুব মজা পেতাম। অন্য ডিপারমেন্টে কুসুম ভর্তি হয়ে ছিল।

এসময় আমার খুব কাছের বন্ধু হয় মোনিকা নামে একটি খুব সফট মেয়ে। কোনদুর ল্যাটাগুড়ি বা অমন কোন যায়গার গ্রাম থেকে আসে। বাড়িতে সব দাদা ওই ছোট ছিল, বাবা-মারও খুব আদুরে। বাবার কথা বলতে বলতে কেঁদেই ফেলত। ও টাউনে কাকার বাড়ি থেকে পড়তে এসেছে। একটু বকলেই কেঁদে ফেলত। আমি বোঝাতাম এখানে এরকম করলে প্যাক খেয়ে মরতে হবে। ও ওর গ্রামের কথা বলত। বিকেলে সব গ্রামে হই-হই করে খেলত। বাবা ডেকে আনত, ও আসতে চাইত না। মা বকত, বাবা কক্ষন বকত না। ও যখন শহরে আসছে তখন নাকি বাবা আর মেয়ে দু’জনে দু’জনকে ধরে কেঁদেই চলেছে! ওর ঠাকুমা আবার ওর বিয়ের জন্য উঠেপরে লেগেছিল। কিন্তু লেখেপড়ায় ভাল বলে কাকুই ওকে টাউনে পাঠিয়ে দেন। বেশ লম্বা-ফর্সা হাসলে বা কাঁদলে দু’সময়ই ওকে পুতুলের মতই লাগত। হাঃ, হাঃ! সেন্টাল স্কুলে কাকলী নামে একটি মেয়ে আবার আমায় জাপানী পুতুল নাম দিয়েছিল। কেন কে যানে!

P.D. Collegeতে কিছুদিন ক্লাস করে A.C. Collegeএ চলে এলাম। P.D. Collegeর বাইরে ছেলেদের দঙ্গল সব সময় জটলা করত। এখানে অনেক ফ্রি। আমি চলে আসতে তপতি আর মোনিকা খুব দুঃখ করেছিল।

ক’দিন পরে দেখি কুসুম এখানে চলে এসেছে। ওর বাড়ি থেকে নাকি মেয়েদের P.D. College ছারিয়ে A.C. Collegeএ ভর্তি করেছে তপতির কারণে। এই নিয়েও একচোট মজা হয়ে গেল। এবার কুসুমকে ভাল করে লক্ষ করার সুযোগ এলো। এতদিনে বেশ লক্ষ্মী টাইপের সুন্দরী হয়েছে। প্রচুর ছেলেরা প্রপোস করছে, ও তা উপভোগও করত দেখতাম। মাঝে মাঝে তপতিও কলেজে আসত। তবে ও খুব কমই এই কলেজে আসত, কারণ প্রচুর প্যাক খেত, উভয় তরফ থেকেই। আমার খুব খারাপ লাগত। বরাবর আমার তপতিটার জন্য মায়া হত। এখনও ভাবলে হয়। নিচু ক্লাসে ও ডানপিঠে একটু গুন্ডী টাইপের ছিল। কলেজে উঠে দেখলাম খুব শান্ত আর কেমন দুঃখি দুঃখি হয়েগেছে।

এবার একটু অন্যদের কথা বলি। যেমন ক্লাসের এক থেকে দশের মধ্যে যারা থাকত। মোহিনী, শিউলি, সাজি, কবিতা-নিবেদিতা(যমজ বোন), সম্পা-আরো অনেকের নাম ভুলে যাচ্ছি।

মোহিনী পড়াশুনা নিয়ে থাকত। তবে খুব দরকারে ওর মধ্যে একটা লিডার ভাব যেগে উঠত।

শিউলি খুব তুখোড় ছিল সব বিষয়েই, তবে ওকে কখন আমার ক্লাসে পাইনি।

সাজি খুব অমায়িক মেয়ে ছিল। আমারা ক্লাস টেনে যে রুমে বসতাম তার পিছনেই দেওয়াল আর তার পাশেই ওদের বিশাল বাড়ি। বাড়িটা খুব ভাল লাগত, কারণ বাড়িটার মাঝখান দিয়ে একটা বড় নারকেল গাছ গেছে। সেটা নাকি অনেক পুরানো আর ওদের মারোয়ারী ফ্যামিলীর লাকি গাছ। আবার বাড়িও করতে হবে! তো গাছটাকে মাঝে রেখে পুর বাড়ি তৈরি। কি ভাবে হয়েছে বরাবর তা নিজের চোখে দেখার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু ওর বাবা প্রচন্ড রাগী ছিলেন। ওরা বোধ হয় তিন বোন। ছেলে ছিলনা বলে কাকুর বোধ হয় দুঃখ ছিল। অথচ তিনটি মেয়েই যাকে বলে রত্ন, তেমনি ছিল। সাজি গল্প করত ওর বাবা রেগে গেলে নাকি বেল্ট খুলে মারতেন!

কবিতা-নিবেদিতা যমজ বোন। হঠাৎ দেখলে চিনতে একটু অসুবিধা হবে।

তবে আমার মনে হত নিবেদিতা খুব কাটাকাটা সুন্দরী, অল্পতে রেগেও যেত। এমনই এক সামান্য কারনে নিচু ক্লাসে আমাদের কথা বন্ধ হয়। অথচ বড় হয়ে যা দু’জনেই জানতাম খুব বোকা বোকা। তবু কেউই আগ বারিয়ে আর কথা বলে উঠতে পারিনি। কলেজে পরীক্ষায় আমাদের সিট পরে পাশাপাশি। ওর ভিতর দিকে। প্রায়ই দেরি করে আসত। দু’জনেই মিষ্টি করে হাসতাম।

কবিতাটা ছিল বিনদাস। ওরা যখন নিচের ক্লাসে পড়ত সব সময় চাইত অন্য অন্য সেকশনে বসতে। এক ক্লাসে কখনও বসতে হলেও দুরে দুরে থাকত। কেউ কাউকে চেনা দিতে চাইত না। দেখে অবাক লাগত। ওদের আবার একটা ওদের মতই দেখতে বোন নিচু ক্লাসে ভর্তি হল। এবার টিফিনে দুই দিদি দেখি দু’দিক দিয়ে বোনকে সারাক্ষণ গার্ড করছে!

কবিতা তুলনামুলক ভাবে বেশি স্টুডিয়াস ছিল। ডিবেটও করত। সদর গার্লসে আমার সাথে ও-ও এলো। দিব্বি অফ পিরিওডে টেবিলে পা তুলে ওর বয়ফ্রেন্ডের জয়েন্ট ফ্যামিলিতে খাওয়ার সময় কেমন ঘণ্টা বাজিয়ে খেতে ডাকা হয় সে সব গল্প করত।

আরেকটি রেঙ্ক করা মেয়ে ছিল নামটা কিছুতেই মাথায় আসছে না। ও প্রায়ই স্কুলে আসত না। টীচাররা খুব বকতেন। কিন্তু যখন আসত তখন সবার মন জয় করে রাখত আর খুব ভাল রেজাল্টও করত। যেহেতু খুব কম স্কুলে আসত আর খুব চুপচাপ থাকত, তাই ওর কোন বন্ধু তেমন ছিল না। প্রচুর ভাল ভাল ইংলিশ সিনেমা দেখত। টিফিনে বা অফপিরিওডে বসে বসে আমি খুব মন দিয়ে সেসব গল্প শুনতাম। ওর কাছেই আমি ‘সিলভার বুলেট’ সিনেমার গল্প শুনি আর ক্লাসে বলে সবাইকে খুব খুশি করি। পরে সিনেমাটা দেখে বরং ওর বলা গল্পটাই আমার বেশি ভাল লেগেছিল।

সেন্ট্রালে আর একটি মেয়ে ছিল নাম মনে নেই। তাকে দেখলে অদ্ভুত একটা অনুভূতি হত। এও রেঙ্ক করত। কিন্তু সব সময় কেমন দুঃখি দুঃখি মত থাকত। শুনেছি রামকৃষ্ণ মিশন থেকে সাহায্য করত। একটা বিনুনী করে আসত। সেটা সরু হতে হতে শেষে একটু হয়ে থাকত। সব সময় মুখে কি একটা কষ্টের হাসি ঝুলত। যে কোন ছুটিতে সবাই রঙীন জামা পরে যেতাম। ও অদ্ভুত! সাধারণ একটা ফ্রক পরেই চলে আসত। আমার যখন কোন কারণে খুব কষ্ট হত সব সময় ওর কথা ভাবতাম। এত্ত ভাল মেয়ে তাও কেমন যেন কষ্ট সব সময় ওর চোখে-মুখে।

অথচ ওর হাতে ছিল জাদু! সেলাই ক্লাসে ধর টিচার সবাইকে সেলাইয়ের ছবি পছন্দ করে নিতে বললেন। সবাই হুরমুর করে ভালগুলো তুলে নিত। সবার শেষে যেটা পরে থাকত সেটা ও পেত। একবার মনে আছে একটা খুব বোকা বোকা টুকরিতে দুটো ফলের ছবি ওর ভাগ্যে পরল। সাধারণ ম্যার ম্যারে ছবি। কিন্তু টিকুজিতে ও যখন করল! অসাধারণ! দিদিমনিরাও অবাক হয়ে গেলেন।
কিন্তু ও বরাবর কেমন ছোট্টটিই হয়ে রইল। আর বয়স হতে হট করে একটু দিদা দিদা লাগত। কখনো কিছু দরকার কিনা প্রশ্ন করতে পারি নি, সংকোচ হত। আমার ওকে নিয়ে এই কষ্ট ওর পাড়ার একটা মেয়ে এক একবার যেনে আমায় খুব বকে। বলে জানিস ওদের বাড়ির সব দরজা –জানলা দামি-দামি কাঠ আর কাঁচের! তবু ওই ছোট্ট মেয়েটার মনে যে কি কষ্ট ছিল কোন দিন বুঝে উঠি নি।

এছাড়া সেন্ট্রালের আর যাদের কথা মনে আসছে-সুজাতা, পাপিয়া, বেবি, সুইটি, নুপুর, দীপশিখা, নিশা, তমালী, বিপাসা, অন্তরা, অজন্তা, তৃণা, মালা......।

নিশার কথা একটু বলি। ছোট খাট, চোখটা মায়া ভরা, বড় বড় চোখের পাতা। একটা ঘুম ঘুম ব্যাপার ছিল। ও-ও র্যাসঙ্ক করত। ও আর ওর দিদি আমাদের স্কুলে পড়ত। মা ছিল না। বাবা ছিল। টিচাররা খুব ভালবাসত। দিদিটা ছিল উলটো পিঠ! পরে আরো বাজে হয়ে যায়। যাক, নিশার কথা বলি। ও কলেজে ভর্তি হল আবার নার্সিংএ ও ওর নাম উঠে ছিল। ঠিক এই সময় ওর বাবা মারা গেলেন। জ্যাঠার কাছে দু’বোন চলে এলো। জ্যাঠা ওর নামও চেঞ্জ করে দিল।

এত শান্ত! নার্সিংএ যাবার একটুও ইচ্ছে ছিল না। আমাদের সাথে ক’দিন ক্লাসও করে। শেষে যেতে বাধ্য হয়। কিছুদিন পর সেই কোন দুর যায়গা থেকে পালিয়েও আসে। পাগলাগারদে বা ওমন কোন ভয়ঙ্কর রূগীদের ওখানে ওকে যেতে হয়েছিল। কাউকে কিছু না বলে চলে এলো। এদিকে ওর দিদিকে নিয়ে জ্যেঠা নাজেহাল। ওকেও আর রাখবেনা! ও কলেজে এসে কি কান্নাই না কাঁদত। ও ঠিক আমার ডিপার্টমেন্টের ছিল না। ওর সহপাঠিরা যে কি ভাল ছিল! ছেলেরা উঠে পরে লাগল। ওর জ্যেঠাকে বোঝাল। হল না। তো, ওকে নিয়ে ছেলেগুলো আবার ওর যেখানে নার্সিংএর ট্রেনিং চলছে সেখানে গেল। ওরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখত। পরে শুনেছি ও অনেক মানিয়ে নিয়েছিল।

দীপশিখার কথা মনে আছে, কারণ ও ছিল ওর মার একদম কার্বন কপি! মুখে একটা ছোট্ট আঁচিল, সেটি পর্যন্ত!


(সকল চরিত্রের নাম পরিবর্তন করা হল)

No comments:

Post a Comment

Run To You - Live at Slane Castle, Ireland.mp3

Followers