Blog Archive

Wednesday, September 16, 2015

কথাচ্ছলে মহাভারত - ১০৬

[পূর্বকথা - পারিজাত হরণের কথা শেষ হল...এবার সুভদ্রা হরণের কথা... সুভদ্রার ইচ্ছে রাখতে সত্যভামা কৌশলে তার গন্ধর্ব বিবাহ দিলেন অর্জুনের সাথে ... ]

অর্জ্জুন-সহ সুভদ্রার বিবাহে বলরামের অসম্মতিঃ 



পরদিন প্রভাতে সব যাদব প্রধানরা স্থানদান করে একত্রে বসলেন। 
সভায় উগ্রসেন, বসুদেব, সাত্যকি, উদ্ধব, অক্রুর, সারণ, গদ, মুষলী, মাধব প্রমুখরা যখন বসে, তখন পূর্বদিনের প্রসঙ্গ টেনে নারায়ণ কৃষ্ণ বলেন –সুভদ্রাকে দেখে আমি চিন্তিত। বিবাহযোগ্য কন্যা অবিবাহিত থাকলে সে সবার কাছে অস্পৃশ্য হয়ে যেতে থাকে। অনূঢ়া কুমারী ঋতুবতী হলে তার সপ্তকুল অধোগতি হয়, যা কুলের কলঙ্ক আর সংসারের লজ্জা। তাই কন্যাদানে ব্যাজ(দেরি) করা উচিত নয়। সাত বছরে কন্যা দিলে ফল পাবে, এর বেশি বিলম্ব উচিত নয়। সুভদ্রার জন্য তো যোগ্য কাউকেই দেখছি না! আমার মন কেবল কুন্তীর পুত্রকে নির্বাচন করছে। রূপে, গুণে, কুলে, শীলে, বলে বলবান পার্থই যোগ্য পাত্র অনুমান করছি।

শুনে বসুদেব বলেন –কৃষ্ণের কথা আমারও মনের ইচ্ছা। সাত্যকি বলে-আমাদের কুলের সৌভাগ্য থাকলে সুভদ্রা অর্জুনকে স্বামী হিসাবে পাবে। 

অন্যান্য যাদবরাও বলে ওঠে –ভাল, ভাল। অর্জুনের সমান ভূতলে আর কেউ নেই। 

সবার এমন বাক্য শুনে রক্তচক্ষু করে ক্রোধে হলধর বলরাম বলে ওঠেন –কেন মিছে সুভদ্রার জন্য চিন্তা করছ! আমি তার জন্য পাত্র ঠিক করে রেখেছি। কৌরবকুলের শ্রেষ্ঠ রাজা দুর্যোধন। উচ্চকুল বলে ভুবন বিখ্যাত। শক্তি বলে তিনি দশ সহস্র বারণ(হস্তি) সমান। রূপে সে কন্দর্প এবং জিনে ধরে বৈশ্রবণ(বিশ্রবামুনির পুত্র-কুবের, রারণ প্রমুখ)। 
অর্জুনকে তার শতাংশের মধ্যেও আমি গণি না। এসব না বুঝে কথা বলা উচিত নয়। এখনি হস্তিনানগরে দূত পাঠিয়ে তাকে এখানে দ্রুত আনা হোক। শুভদিন দেখে শুভকার্য করব। শত শত রাজ্যের রাজাদের আমন্ত্রণ করে আনব। 

বলরামের মুখে একথা শুনে সকলে অধোমুখে নিরুত্তর থাকলেন। ততক্ষণে বলরাম দূতকে ডেকে রাজ্যে রাজ্যে নিমন্ত্রণ পত্র লিখতে থাকেন। 

দুর্যোধনের উদ্দেশ্যে লিখে দেন –সুসজ্জিত হয়ে দ্রুত চলে আসুন, আপনার বিবাহ। 

মহাভারতের কথা অমৃত লহরী, কাশীরাম কহেন, সাধুজন যান ভব তরি।
....................................

No comments:

Post a Comment

Run To You - Live at Slane Castle, Ireland.mp3

Followers